আমার ব্রাইটেনিং নাইট স্কিনকেয়ার রুটিন
চলে এসেছে প্রচণ্ড গরম এবং কড়া রোদের সিজন… যত কেয়ারই করি না কেন এই সিজনে বাইরে গেলে একটু আধটু ট্যান আমরা হবই ! হার্টব্রেকিং, জানি…
কিন্তু কি করা যাবে আর বলুন!এই সিজনে ট্যান হবেই আর ট্যান যেন একটু হলেও কম হয়তাই গরম পড়ার প্রায় সাথে সাথে আমি নতুন একটা রুটিন তৈরি করে ফেলেছি… এখনই যদি এমন একটা ব্রাইটেনিং রুটিন ফলো করি তবে গরমের সময়টায় স্কিন ট্যান এবং সান ড্যামেজ সবই বেশ অনেকটা কমানো পসিবল। তাই ভাবলাম বেসিক এই সামার ব্রাইটেনিং স্কিনকেয়ার রুটিন সবার সাথে শেয়ার করেই ফেলি।
আগেদেখি,সামারেই কেন স্কিনে এতো ট্যান হয় ?
সূর্যের ক্ষতিকর রে যখন আমাদের স্কিন টাচ করে তখন কিছুক্ষনের ভেতরেই আমাদের স্কিন পুড়তে অর্থাৎ বার্ন হতে শুরু করে। এরকম চলতে থাকলে কিছুক্ষনের ভেতরে আমদের স্কিনের সেল গুলোর অপূরণীয় ক্ষতি হয়। এই সেল ড্যামেজ থেকে নিজেকে বাঁচাতে তাই রোদের সংস্পর্শে আসলে স্কিন নিজে একটি বর্ম তৈরি করে। আর এই বর্মই হচ্ছে ‘মেলানিন’ যা স্কিন প্রটেক্ট করার সাথে সাথে আমাদের স্কিন এবং চুলের কালারের জন্য দায়ী।
কিন্তু অতিরিক্ত মেলানিন যখন তৈরি হয় স্কিনে তখনি সেটাকে আমরা বলি ট্যান। এই মেলানিন অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেবার মতো !!মানেযেখানে স্কিন রোদের সংস্পর্শে আসে সেখানেই বেশি তৈরি হয়।
আর ঠিক এই কারনেই আমাদের বডির যেসব এলাকা সান রে টাচ করে সেই সব যায়গায় দেখা দেয় জেদি ট্যান !!
তো এখন আসি কিভাবে ট্যান রিমুভ করতে নিজের স্কিনকেয়ার রুটিন ফর্ম করবেন, সেই টপিকেঃ
ক্লিঞ্জিংঃ
আমার ক্লিঞ্জিং-এর মটো হচ্ছে, স্কিন এমনভাবে পরিস্কার রাখব যেন কিছুদিন পরপর নতুন নতুন ব্রেকআউট না হয়। চিন্তা করুন, যতই স্পট ক্লিয়ারিং, ব্রাইটেনিং প্রোডাক্ট কিনে ইউজ করিনা কেন, যদি ২-৩ দিন পরপর যদি নিউ ব্রেকআউট হয়ে নতুন নতুন স্পট ফেলে যায়, স্কিন তো স্পটলেস কখনই হবে না!! তাই না??
তাই অবশ্যই প্রতিদিন মিনিমাম ২ বার ভালোভাবে ফেসওয়াশ করা জরুরী…
আমি সকালে শুধু JNH 3 IN 1 ক্লিনজার ইউজ করি। এতে স্কিনটা হাইড্রেটেড থাকে। আর স্কিনের ময়েসচার ব্যালেন্স ঠিক থাকে।
কিন্তু রাতে যেহেতু স্কিনে মিনিমাম সানস্ক্রিন আর চোখে ঠোঁটে মেকআপ থাকে আর মাঝে মাঝেই মেকআপ নেয়া হয় তাই রাতে আমি নিয়ম করে ফার্স্টেJNH 3 IN 1 CLEANSERএরপর JNH whipping cleansing foam দিয়ে ভালোভাবে ডাবল ক্লিঞ্জ করি।
এক্সফোলিয়েটর/ স্ক্রাবঃ
স্কিনের উপরে ডেড সেলের লেয়ার জমে থাকলে দুটো ঘটনা ঘটে।
১। এই ডেড সেল স্কিনে লাইট রিফ্লেকশনে বাঁধা দেয়। তাই স্কিন গ্লো করে না এবং রাফ দেখায়
২। ডেড সেলের লেয়ারের কারনে স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট এবং একটিভ উপাদান গুলো স্কিনের ভেতরে গিয়ে নিজের কাজটা করতে পারে না। অর্থাৎ, এতো ভালো মানের উপাদান এবং আমার কষ্টের টাকা, দুটোই কিন্তু ওয়েস্ট হচ্ছে!!
ঠিকমতস্ক্রাবকরাহলেস্কিনেরউপরেরএক্সেস মেলানিন যুক্ত সেলগুলো কুইকলি রিমুভ করা যায়। এতে ট্যান দ্রুত দূর হয়। তাই সপ্তাহে ২-৩ বার ভালোভাবে স্কিন স্ক্রাব করে নেয়াটা খুবই জরুরী। আমি স্ক্রাব রাতেই করি, কারন আমার মনে হয় এতে এক্সপোসড হওয়া নিউ সেল গুলো সূর্যের আলো বা বাইরের ডার্ট ডাস্ট থেকে প্রটেক্টেড থাকে।
আপাতত এই সিজনে ট্যান রিমুভ করার জন্য আমি ACWELL AQUA peel soft টা ইউজ করছি।
(প্রাইস – ১৭০০ টাকা)
এটা খুবই মাইল্ড স্ক্রাব হওয়ায় স্কিনে কোনও র্যাশ বা ওভারএক্সফলিইয়েশন হয় না। আর এসিডিক একটিভ উপাদানের সাথে ভালো ওয়ার্ক করে।
টোনারঃ
টোনার স্কিনের ডিপ লেয়ার থেকে ডার্ট আর মেকআপ রেসিডিউ বের করে নিয়ে আসে। প্লাস আমি টোনার ইউজ করলে সাথে সাথে স্কিনের পোর সাইজে একটা চেঞ্জ দেখি।
আপাতত JNH pore refine soothing toner টা ইউজ করছি। এটা স্কিনের রেডনেস কমায় বলে স্কিন খুব ইভেনটোনড লাগে।
সিরামঃ
ট্যান , স্পট রিমুভ করার জন্য ভিটামিন সি বেস্ট!! কেন? কারন ভিটামিন সি স্কিনের সেলে মেলানিন প্রোডাকশন খুব সেইফলি কমায়। তাই যেকোনো স্পট আর ট্যান (যেগুলো মেলানিনের কারনেই তৈরি হয় তাও কমে)
প্রতিরাতে JNH Pure Vitamin C 15% essenceইউজ করাটা তাই আমার জন্য মাস্ট !!! যেকোনো ট্যান দ্রুত কেটে যায়। মাঝে মাঝে মনে হয় হাতে পায়েও এটা ইউজ করলে মনে হয় ভালো হত !!!
ময়েসচারাইজারঃ
স্কিনের ব্রাইটনেস বাড়াতে ভিটামিন সি কত ভালো কাজ করে সেটাতো বলেছিই। তাই একি ইফেক্ট পেতে ট্যান রিমুভাল রুটিনেJNH ultimate vitamin C cream টা ইউজ করি। এটা ইউজ করার আরেকটা সুবিধা হল, এটার সেইফ ভিটামিন সি ডেরিভেটিভ চোখের আশেপাশেও ইউজ করা যায়। তাই চোখের উপরের পিগমেন্টেশন আর নিচের ডার্ক সার্কেলে অনেক হেল্প হয়। ব্রাইট স্কিনে ডার্ক সার্কেল কি বাজে দেখায়, তাই না ?? তাই একি ক্রিম দিয়ে এক ঢিলে দুই পাখি মারছি আরকি !!
স্লিপিং মাস্কঃ
আমি এমন একটা স্লিপিং মাস্ক ইউজ করি যেটায় অনেক অ্যান্টিঅক্সিডান্ট আছে। কারন এই ধরণের মাস্ক স্কিনের সান ড্যামেজ রিভার্স করে এবং সেল রিজেনারেশনে হেল্প করে। এতে এসিড টাইপ প্রোডাক্ট ইউজ করার কারনে স্কিনে যে সাময়িক ড্রাইনেস এবং পিলিং দেখা যায় সেটা অনেক কনট্রোলে চলে আসে। আর আগের মেলানিন যুক্ত ডার্ক সেল টার্নওভার হয়ে নিউ সেল গ্রোথের হার অনেক বেড়ে যায়।
আপাতত আমি ১ দিন পর পর নিয়ম করে LIME TREE OF MINE Berry Berry Hydrating Mask টা ইউজ করছি।
(রেগুলার প্রাইস – ১১০০ টাকা, অফার প্রাইস – ৭৫০ টাকা !! )
এটা চোখের আশেপাশে আর ঠোঁটেও দেয়া যায়। এই সুবিধার কারনে আমার লিপ মাস্ক আর মাস্ক ইউজ করার ঝামেলা আর নিতে হয় না। !! আর ঠোঁট + চোখের ফাইন লাইনসে ইমেডিয়েট একটা ইম্প্রুভমেন্ট দেখি।
এইতো… এই আমার এই সিজনের ডেইলি নাইট রুটিন। অনেকেই জানতে চাইছিলেন বলে একবারে বড় করে ডিটেলে লিখে ফেললাম। এভাবে একটা বেসিক রুটিন বানিয়ে নিলে এই গরম বা পহেলা বৈশাখের সময়ের ট্যান টা এভয়েড করতে পারবেন।