প্রোডাক্ট রিভিউঃ JNH 3 in 1 cleanser
মেকাপ-সেকাপ কোনকালেই ওইভাবে করিনি… কিন্তু ওই একটু পাউডার, কাজল, মাস্কারা ইউজ না করে কি বাইরে যাওয়া যায়? তো ওটুকুই করা হত! বাসায় ফিরে ফেসওয়াশ দিয়ে ঘষে ভাবতাম সব বোধহয় ক্লিন হয়ে গেল! এরপর একদিন কি হল জানেন? গ্রুপে এক আপুর দেখাদেখি টোনার কটন প্যাডে নিয়ে ইউজ করার ট্রাই করলাম। ভাবলাম- দেখি টোনারে স্কিন কেমন ক্লিন হয় !!?
ভাবতেও পারবেন না প্রথমবার টোনার এভাবে ইউজ করতে গিয়ে আমি কটনপ্যাডে কি দেখেছি !!! এত্ত ডার্ট আর মেকাপ রেসিডিউ উঠে এলো যে কি বলব!! ৩-৪ টা কটন প্যাড দিয়ে স্কিন ক্লিন করার ট্রাই করেছিলাম জানেন? তাহলে ফেসওয়াশ দিয়ে কি লাভ হল??
বলতে গেলে তখনি বুঝতে পারলাম যে আমার ফেসে যে ছোট ছোট দানা এবং ব্রেকআউট এসবই হচ্ছে স্কিন ক্লিন না থাকার জন্য…
এরপর ফেসবুকে পেজে পেজে নক করে ভালো ফেসওয়াশ খোঁজা শুরু করলাম । প্রথম শুনলাম কোরিয়ান স্কিনকেয়ার ার ওয়েল ক্লিঞ্জার কি?? আমারতো মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ল??
পাগল নাকি?? ময়লা স্কিনে কতগুলো তেল দিয়ে নাকি ফেস ক্লিন হয়!!!!! কত্ত কিযে করে মানুষ !!!
এরপর গতবছর শাইনস্কিন গ্রুপে অ্যাড হয়ে জানলাম ট্রেডিশনাল ওয়েল ক্লিঞ্জারের বাইরেও কিছু আছে। এর আগে নরমাল ওয়েল ক্লিঞ্জার ট্রাই করে দেখেছি কিন্তু অমন একগাদা তেল মুখে দিতে আমার খুবই ভয় হত! কে জানে যদি এই তেল থেকেই ব্রন হয়!! এই ভয় থেকে বাঁচতেই মূলত প্রথম JNH 3 in 1 cleanser ট্রাই করা।
JNH- এর ক্লেইমঃ
JNH এর দাবি অনুযায়ী… এই ক্লিঞ্জারটা একাই সব ধরনের মেকাপ (নরমাল ও ওয়াটারপ্রুফ) এবং যেকোনো ধরনের সানস্ক্রিন রিমুভ করার জন্য যথেষ্ট। এরপর কেউ ইচ্ছা হলে ফেসওয়াশ ইউজ নাও করতে পারে। স্কিন ঠিকই প্রপারলি ক্লিন হবে…!
প্যাকেজিং
এই ক্লিঞ্জারটা পাওয়া যায় বড় ২০০ মিলির পাম্প বোতলে করে। এটা পুরো এয়ারটাইট। পাম্প বোতলে থাকায় আমি বাথরুমে রেখে দেই। ওখান থেকেই ইজিলি ইউজ করি। এতে প্রোডাক্ট স্পিল হওয়ার চান্স অনেক কমে বলে আমার ধারণা। এর আগে বহু প্রোডাক্ট ার মেকাপ আমি হাত থেকে ফেলে নষ্ট করেছি কিনা!! আমি জানি … (দুঃখের ইমো হবে)
দামঃ
২০০ মিলি ক্লিঞ্জারের দাম ২১০০ টাকা পড়েছে। অনেকের কাছে খুব বাজেট ওয়েল ক্লিঞ্জারের তুলনায় দাম একটু বেশি মনে হতে পারে।
আমার কেমন লাগলো?
প্রথমে ক্লিঞ্জারটার টেক্সচার কেমন জানিয়ে দেই। এটা এক্কেবারেই ওয়েল ক্লিঞ্জারের মতো চিটচিটে নয়। এটা পুরো স্বচ্ছ লাইট জেল টেক্সচারের একটা প্রোডাক্ট। নিচের ছবিতে টেক্সচার বোঝানর ট্রাই করলাম… দেখুন কতটুকু বোঝা যাচ্ছে
আমি বাসায় ফিরে প্রথমে আমার হাত ধুয়ে নেই। এরপর শুকনো হাতে ২-৩ পাম্প ক্লিঞ্জার এভাবে নিয়ে শুকনো ফেসে লাগিয়ে খুব লাইটলি ম্যাসাজ করি। কোন এক ব্লগে দেখেছিলাম ক্লিঞ্জার ২-৩ মিনিট ম্যাসাজ করতে হয়। আমি সেই হিসেবে ২ মিনিটই ম্যাসাজ করি।
এর ভেতরে ফেসে থাকা সব ওয়াটারপ্রুফ মেকাপ, ম্যাট লিপস্টিক গলে যায়… কিভাবে এই ক্লিঞ্জারটা মেকাপ মেল্ট করে নিচের ছবিতে দেখতে পারেন
ক্লিঞ্জার ইউজের আগে
ক্লিঞ্জার ম্যাসাজ করছি। দেখতেই পাচ্ছেন ওয়াটারপ্রুফ লাইনার আর ম্যাট লিপস্টিক মেল্ট হয়ে যাচ্ছে।
এভাবে পুরো মেকাপ মেল্ট হবার পর আমি ফেসে একটু পানির ছিটা দিয়ে আরও ১০-১৫ মিনিট ম্যাসেজ করে নেই। এতে ক্লিঞ্জারটা একটু ইমালসিফায়েড হয়ে যায়। এরপর আমি পানির ঝাঁপটা দিয়ে পুরো ক্লিঞ্জার এবং মেকাপ সরিয়ে ফেলি।
ক্লিন স্কিন!!
যদি একটু হেভি মেকাপ থাকে তাহলে আমি রিস্ক না নিয়ে এরপর আবার একটা সেপারেট ফোমিং ফেসওয়াশ ইউজ করি। কিন্তু শুধু এই ক্লিঞ্জারটা দিয়ে এভাবে ক্লিন করার পর আমি অনেকবার কটন প্যাড দিয়ে টোনার লাগিয়ে দেখেছি। টোনারে আগের মতো গাদা গাদা লাইনার মাস্কারা আর রেসিডিউ উঠে আসে না। সো বুঝতেই পারছেন, শুধু ফেসওয়াশে কখনোই মেকাপ, সানস্ক্রিন ক্লিন করা পসিবল নয়!!
কিছু টিপসঃ
- স্কিন খুব ড্রাই বা ডিহাইড্রেটেড হলে এই ক্লিঞ্জারের পর আর ফেসওয়াশ ইউজ না করলেও চলবে। এতে স্কিন বেশি ড্রাই হয়ে টানটান হয়ে থাকবে না।
- সকালে খুব হারশ ফেসওয়াশ ইউজ না করে জাস্ট এই ক্লিঞ্জারটা এক পাম্প ইউজ করে দেখতে পারেন। আমি এভাবে ট্রাই করেছি। স্কিন খুব ভালো সফট হয়!!
শেষ কথা এই ক্লিঞ্জারটা ইউজ করে আমার মোটামুটি চোখ খুলে গেছে… আমি এরপর আর ফেসওয়াশ দিয়ে মেকাপ তোলার কথা চিন্তাও করবো না…!! আমার মতো মেকাপ সানস্ক্রিন জমে পোর বন্ধ হয়ে তৈরি হওয়া ছোট ছোট বাম্প ব্রনের প্রবলেমে ভুগছেন, কিন্তু ওয়েল ক্লিঞ্জার ইউজ করতে চাচ্ছেন না বা ভয় পাচ্ছেন, তাদের জন্য এটা খুবই ভালো একটা অপশন!!
কিন্তু!
দামটা আরেকটু কম হলে সবার জন্য এটা এফরডেবল হতো! তাই না?? বেশি না!! অল্প একটু! ক্লিঞ্জার শেষ হয়ে এলেই আমার বুক ধরফর করে… বোধহয় আজকেই কিনতে হবে!! এই ভেবে
JNH এর কাছে রিকোয়েস্ট থাকবে দামটা একটু নাগালের ভেতরে নিয়ে আসার জন্য!!